Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব

সাবাস চেয়ারম্যান খ্যাত গণপরিষদ সদস্য আবুল ইসলাম

 

মরহুম আবুল ইসলামের সংক্ষিপ্ত জীবনী:

যশোর ঝিকরগাছা উপজেলাধীন হাজিরবাগ গ্রামে ১৯২৪ সালে সম্ভ্রামত্ম এক মুসলিম পরিবারে আবুল ইসলামের জন্ম। তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা জীবন কাটে উপজেলার সোনাকুড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। মাধ্যমিক শিক্ষার জন্য ভর্তি হন যশোর সম্মিলনী ইনস্টিটিউশনে। তখন নবম থেকে দশম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হওয়ার সময় যারা বাংলায় সর্বোচ্চ নম্বর পেতেন তাদেরকে স্বর্ণপদক দেয়া হত। তিনি সেই স্বর্ণপদক পেতে সক্ষম হয়েছিলেন। ১৯৪৩ সালে ম্যাট্রিক পাস করে অবহেলিত জনগোষ্টীর সেবাদানের জন্য ভারত বর্ষের নাম করা ডাক্তার তার পরম আত্মীয় ডাক্তার মমতাজউদ্দীনের কাছ থেকে ডাক্তারী শিখে ঐ পেশায় জড়িয়ে পড়েন। উলেস্নখ্য, ঐ সময় তিনি এক দিন ডাক্তারী পেশা জীবনে সর্বোচ্চ ৬০১/-(ছয় শত এক) টাকা আয় করেছিলেন। যা দিয়ে ঐ সময় ২৫ বিঘা জমি কেনা যেত। ডাক্তারীতে তার হাতযশ ছিল খুব।

 

তিনি ১৯৫৪-১৯৭০ পর্যমত্ম বিভিন্ন সময়ে ইউনিয়ন বোর্ডের মেম্বর, ইউনিয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান, ডিষ্ট্রিক বোর্ডের মেম্বর, প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য-১৯৭০, গণপরিষদ সদস্য-১৯৭১, জাতীয় সংসদ সদস্য-১৯৭৩ নির্বাচিত হয়ে মানুষের তথা দেশ সেবা করেছেন।

 

তিনি ৭১-এ যুদ্ধকালিন ভারতে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প চাঁপাবাড়িয়া এবং বনগাঁ স্পোটিং ক্লাবের পলিটিক্যাল এডভাইজার ছিলেন। দুই শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে সুইসাইড স্কোয়াড গঠন করে দেশের অভ্যামত্মরে পাক হানাদারদের বিরম্নদ্ধে সম্মুখ স্বশস্ত্র যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। তাঁর নির্বাচনী এলাকায় ভ্রাতুষপুত্র মাহফুজুর রহমান হেমসহ ১২জন শহীদ হন এবং রকেট জলিল ও হাজারী লাল তরফদার বীর প্রতীক খেতাব পান। মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের পক্ষে জনমত তৈরী করার জন্যে সায়েন্স ল্যাবরেটরী, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর আবেগময়ী আগুন ঝরা বক্তব্য শুনার পর কতিপয় ছাত্র অনুপ্রাণিত হয়ে হাতে অস্ত্র তুলে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করে।

 

১৯৬৪ সালে স্বৈরশাসক লৌহমানব আইয়ুব খানের ‘‘বেসিক ডেমোক্রেসি প্রথা’’ কালা কানুনের বিরম্নদ্ধে সারা পাকিসত্মানের একমাত্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসাবে তীব্র প্রতিবাদ করে জয়ী হন। তৎকালীন ইত্তেফাক তাকে নিয়ে ‘‘সাবাস চেয়ারম্যান’’ শিরোনামে লীড নিউজ করেন পরবর্তিতে বঙ্গবন্ধু তাঁকে ‘‘সাবাস চেয়ারম্যান’’ উপাধি দেন। ঐ ঘটনায় আবেগাপস্নুত বঙ্গবন্ধু তাকে দু’বার সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দেন এবং তিনি বিপুল ভোটে জয়ী হন।

 

স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান সরকার আমলে তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ করায় দীর্ঘদিন কারাভোগ করেন এবং নির্মম, নিষ্ঠুর, পৈশ্বাচিক নির্যাতনের শিকার হন।

 

বঙ্গবন্ধু’র হত্যার পর ’৭৫ সালের আগষ্ট মাসেই তিনি সর্বপ্রথম একমাত্র নির্বাচিত সংসদ সদস্য হিসাবে (ক) যশোর ঈদগাহ ময়দানে গাবেয়ানা জানাযা, (খ) যশোর থেকে টুঙ্গিপাড়া হেঁটে যেয়ে বঙ্গবন্ধু’র কবর জিয়ারত করেন, (গ) বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে তিনি নিয়মিত কোরবানি করতেন।

 

বাংলাদেশের মধ্যে বিরল সৌভাগ্যবান ব্যক্তি হিসাবে তিনি ১৯৪৯-২০০৪ পর্যমত্ম ৫৫ বছর ভাষা, শিক্ষা, স্বাধীকার, স্বাধীনতা, গণতন্ত্রের জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের মূলধারায় সততা, নিষ্ঠা, ত্যাগ ও আদর্শের সংগে আমৃত্যু রাজনীতি করেছেন।

 

২০ফেব্রম্নয়ারি ২০০৪ মৃত্যু বরণ করেন। তাঁর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী বঙ্গবন্ধুর মত ৫৭০ কাপড় কাঁচা সাবান দিয়ে গোসল ও সসত্মা মার্কিন থান কাপড়ের কাফন পরিয়ে সমাহিত করা হয়।